স্বপ্নডিঙ্গা

MS ISLAM _ BDTutorials2
0
স্বপ্নডিঙ্গা
ইদানীং নস্টালজিক মন আমার দণ্ডে দণ্ডে কোথায় যেন হারিয়ে যায়!
জীবনটা আসলে কি, জীবনের মানেই বা কি, কি পেলাম জীবনে?
অকস্মাৎ এ মনটা পাওয়া নাপাওয়ার হিসেব মিলানো শুরু করে,
পাওয়া নাপাওয়ার এই হিসেব মিলাতে গিয়ে হিমশিম খাই,
রিক্ত চিত্তে আবার শুরু হয় প্রবাসের পথ চলা।
জীবনে প্রতিটি মানুষের মত আমিও স্বপ্ন দেখি,
স্বপ্ন এবং আশা নিয়েই আজো বেঁচে আছি।
প্রতিটি মানুষের মত আশা আর স্বপ্নের মাঝেই
জীবনের সকল চাওয়া পাওয়া ঘোরপাক খাচ্ছে।
মানুষ মাত্রই স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন দেখা তো আর অন্যায় নয়,
আশা এবং স্বপ্নের সাথে প্রতিটি মানুষের রয়েছে অভেদ্য সম্পর্ক,
কালের পরিক্রমায় মানুষের জীবনও গতি পাল্টায়।
জীবন প্রবাহের ধারাবাহিকতায়, আশা এবং স্বপ্নকে লালন করেই মানুষ দেশান্তরী হয়।
স্বপ্ন বাস্তবায়নে, অনন্ত উদ্দীপনা এবং ধৈর্য, জীবনের বাস্তবতা, ঘাত-প্রতিঘাত, আশা-নিরাশা
এবং আনন্দ-বেদনার উখলিত জীবন প্রবাহিণী পাড়ি দিয়ে আজ প্রবাস নামের স্বপ্নডিঙ্গায়।
আর এই স্বপ্নডিঙ্গা যেন প্রবহমান জীবন-স্রোতস্বিনীর স্রোতের মতো, প্রবাহিত হয় তার আপন গতিতে।
কারো কারো এই স্বপ্নডিঙ্গা ভব-সিন্ধুর তীর খুঁজে পায়, কারো স্বপ্ন ডিঙ্গা জলনিধির মাঝেই সলিল সমাধি হয়।
মাঝে মাঝে মর্ম সায়রে শুরু হয় উত্তাল তরঙ্গ,
না পাওয়ার মর্মপীড়ায় হাহাকার করে মন, উচাটন এ মন চায় আবার ফিরে যাই কৈশোর।
অলীক আশার ব্যর্থ মিশনে মন আপ্লুত হয় নতুন অনুরাগের আহ্ববানে,
তবু মন স্বপ্ন দেখে, বারাবার নয়নতারায় ভেসে উঠে প্রিয়ার চন্দ্রমুখী বদন।
যার যৌবনের প্রণয়ী নূরের জেল্লা এখনও ভাসে চোখের তারায়।
যার সর্বস্ব উজার করে ঢেলে দিয়েছিল আমার হৃদয় মন্দিরে,
তার স্মৃতি মন্থনে আজো হৃদয় বীনায় বেজে উঠে সুরের মূর্ছনা।
নস্টালজিক অনুভূতি আমার আজো খোঁজে ফেরে ভাসবাসার মূল্যবোধ।
মাঝেমাঝে মনে হয়, আমি যেন এক অনুভূতিহীন সারবত্তা,
ঋতুরাজ বসন্তের আগমন, গন্ধরাজের মনোহর সৌরভ,
ঊষা- অর্কের মৃদু দীপ্তি, শুভ্র জ্যোৎস্নালোকিত পুলকিত নিশি মাইফেল,
নদীর তীরে কাশফুলের দোলা, জ্যোৎস্না-স্নাত রজনী আর মৃদুমন্দ সমীরণ।
যান্ত্রিক ছুটাছুটির প্রবাস জীবনে এসব কিছু মনে যেন আর কোন শিহরণ জাগায় না।
অবজ্ঞা আর বিষণ্ণতার এই প্রবাসী জীবনের ইতিবৃত্ত কিভাবে লিখবো?
 স্বপ্ন শোভিত প্রবাস আর বাস্তবের এই প্রবাসের মধ্যে আসমান-জমিন তফাৎ,
সাগরের সমস্ত জল কালি করে, মর্ত নামের খাতায় যদি প্রবাসের ইতিবৃত্ত লেখা হয়,
তবু প্রবাসীর ইতিবৃত্ত কভু শেষ হবার নয়।
প্রবাসী নামক এই অর্থবৃক্ষটি ইটের বালিশের উপর কতটা রজনী যে পার করেছে কে রাখে তার খবর?
প্রবাসীদের জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে হাজারো কাহিনী যা আপনজনরা জানেন না,
সময়তে ইচ্ছা করেই জানানো হয় না।
পর্বতময় কষ্ট বুকে নিয়ে অনেক প্রবাসীর রজনী পোহায়।
আর এই কষ্টের কথা কাউকে বলেই বা কি লাভ!
একজন প্রবাসীকে সরকার মনে করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি,
শুধু সরকার কেন! আমাদের আপনজনরাই তো আমাদেরকে দেখে সুখের মাইল ফলক হিসেবে।
কারে আর শোধাবো একাকীত্বের যাতনা ? কাউরে আর শোধাতে চাইও না।
নয়নের জল নয়নেই শুকিয়ে যাক, দু:খ যত আমারই থাক।
আমার কষ্টার্জিত রেমিটেন্সে যদি আমার প্রিয় মাতৃভূমি সুখে থাকে, তাতেই আমি সুখি,
ভাল আছি মিথ্যে বললে কিংবা যদি আমার জীবনের কষ্টের বিনিময়ে
আমার স্বজনেরা সুখী হয়, তাতেই আমি সুখি।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)